বগুড়ায় বিয়ের দাবীতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অনশন

অপরাধ

মতিন খন্দকার টিটু :
বিয়ে তোমাকে করতেই হবে। তুমি আমার সব নিয়েছো। এখন বিয়ে না করলে আমার এ জীবন শুণ্য মরুভুমি। গত শনিবার ৮ আগষ্ট বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলার জালশুকা গ্রামে খায়রুল ইসলামের মেয়ে রুপা খাতুন (১৯) তার প্রেমিক একই গ্রামের মৃত জাকের আলীর ছেলে মন্জুরুল আলমের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দাবীতে অনশনরত অবস্থায় এলাকাবাসীর কাছে এসব কথা বলছেন।
অনশণরত রুপা জানায়, প্রায় সাড়ে ৪ বছর যাবত মনজুরুলের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক। কলেজে যাওয়ার কথা বলে সে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়েছে। বিয়ের প্রলোভনে তাকে নিয়ে অনেক আনন্দ ফুর্তি করেছে। অথচ এখন বিয়ের কথা বললে নানা টাল বাহানা করে এবং অন্যত্র বিয়ে ঠিক করেছে জানতে পেরেছি। তাই জীবনের সব কিছু হারিয়ে বাধ্য হয়ে তার বাড়িতে অবস্থান নিয়েছি। তবে এই বিয়ে এড়াতে এসময় প্রেমিক মন্জুর ও তার পিতা জাকের আলী বাড়ি থেকে গা ঢাকা দিয়েছে।
এ বিষয় খোট্রাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ঘটনা জানার পর ওই বাড়িতে গিয়ে অনশনরত মেয়েটির সাথে কথা বলেছি এবং ওই ছেলের সাথে মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক ছিল এটা জেনেছি। তবে প্রেম পরিনয় বা এবষিয়ে কোন প্রমানাদী না পাওয়ায় কোন ব্যবস্থা নেয় সম্ভব হচ্ছেনা। একই ধরনের কথা বলেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার জুয়েল।
জানাগেছে, প্রেমিক মন্জুরুল বগুড়া আজিজুল হক কলেজ থেকে গত বছর মাষ্টার্স কমপ্লিট করেছে এবং রুপা পাশ্ববর্তী গাবতলী উপজেলার বাগবাড়ি শহীদ জিয়া ডিগ্রি কলেজের এইচ এসসি ১ম বর্ষের ছাত্রী এবং বাবা একজন হতদরিদ্র রিকশা চালক। রুপার সাথে দীর্ঘদিন প্রেম পরিণয়ে লিপ্ত থাকলেও কয়েকদিন আগে মনজুরুল অন্য একটি মেয়ের সাথে বিয়ে ঠিক করেছে এবং হবু বউয়ের পিতার নিকট থেকে কয়েক লক্ষ টাকা নিয়ে চাকুরীর উৎকোচ হিসেবে প্রদান করেছে। এলাকাবাসি জানান, মন্জুরুলের এসব ঘটনা নতুন নয়। এর আগে জালশুকা গ্রামের কানু শেখের মেয়ে দীপার শ্লীলতাহানী করে। এরপর শুরিমারা গ্রামের মোহাম্মদ আলীর মেয়ে মৌসুমির সাথেও একই ধরনের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় এলাকাবাসী তাকে গণধোলাই দিয়ে থানা পুলিশে সোপর্দ করে। পরে মুচলেকা দিয়ে আপোষ মিমাংসা করা হয়। এরপরও তার কু-কর্ম থেমে নেই। তারা আরও জানান, মন্জুরুল ইউপি চেয়ারম্যানের লোক। সব সময় তার সাথে থাকে। তাই এ বিয়ে যাতে না হয় সেজন্য দলীয় লোকজন ছেলেটির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে এবং তারা মেয়েটিকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করতে অভিভাবকদের নানা ভয়ভীতি ও চাপ প্রয়োগ করছে। অন্যথায় পুলিশে ধরিয়ে দিবে বলে হুমকি দিতেছে। বিধায় হতদরিদ্র মেয়েটির বাবা চোখের পানি ফেললেও তাদের সাথে পেরে উঠতে পারছেনা।
আর এনিয়ে ৩/৪টি মেয়ের সাথে মন্জুরুলের নারী কেলেংকারী ঘটলেও এসব চাপের মুখে বরাবরই সে থেকে যাচ্ছে ধরা ছোয়ার বাইরে। এছাড়াও আশংকা করা হচ্ছে আইনের ভয়ে বিয়ে পড়ালেও কয়েকদিন পর তালাক দেয়া হবে বলে শোনা যাচ্ছে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিষয়টি থানা পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়নি এবং অনাকাংখিত ঘটনা এড়াতে মন্জুরুলের সাথে বিয়ে দেয়া হবে বলে মেয়েটিকে আস্বস্ত করে বাড়িতে বসে রাখা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.