কুষ্টিয়ায় অপচিকিৎসার শিকার হয়ে এক গৃহবধূর মৃত্যু চিকিৎসক আটক

অপরাধ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :
কুষ্টিয়া শহরের উপজেলা মোড়ে ইসলামিয়া হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ১ আগষ্ট শনিবার ঈদের দিন রাত ৯টার দিকে সিজার অপারেশন করতে গিয়ে এক রোগীর মৃত্যু ঘটে,এ ঘটনায় কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ অত্র হাসপাতাল থেকে ডাঃ আবু সাঈদ সিদ্দিকী নামে এক চিকিৎসক কে আটক করেছে,ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে ঘটনার মূল হোতা হাসপাতাল মালিক নিজাম,আপোষ-রফা করতে চাচ্ছে নানান ভাবে চাপ প্রয়োগ করে দাবী নিহতের স্বজনদের।
জানা যায়,ঈদুল আযহার দিন সবাই যখন আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেছে,তখন প্রসব বেদনায় কাতর হয়ে পড়েন,কুষ্টিয়া কুমারখালি উপজেলার বাঁশ গ্রামের আলী আকবরের স্ত্রী মোছাঃ আসমা খাতুন(২৭)।রাত সাড়ে আটটার দিকে তাকে রাত ৮ টার দিকে নিয়ে আসা হয় কুষ্টিয়া উপজেলা মোড়ে অবস্থিত ইসলামিয়া হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। আগে তানিয়ার দুইটি সন্তান হয়েছিলো সিজার অপারেশনের মাধ্যমে এটি ছিল তার তিন নম্বর সিজার।নিহত তানিয়ার স্বামী আলী আকবর জানান, উক্ত হাসপাতাল মালিক নিজাম তার সাথে ১৭হাজার টাকায় কন্ট্রাক্ট করে, এবং বলে তিন নম্বর সিজার তো কি হয়েছে আমি ৪/৫নম্বর সিজার করেছি,আমি নিজেও একজন ডাক্তার,একথা বলে নিজাম নিজে তার স্ত্রী ও একজন নার্স ওটিতে ঢোকে। প্রায় আধাঘন্টা পরে আমাদের জানানো হয় রুগির অজ্ঞানে একটু সমস্যা হচ্ছে রাজশাহি নিতে হবে,ওখানে গেলেই রুগি ঠিক হয়ে যাবে।এ সময় রুগীর শরির খুব ঠান্ডা থাকায় আমাদের সন্দেহ হলে তখনই রুগীকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি,এখানকার ডাক্তাররা আমাদের জানান,প্রায় ঘন্টা খানিক আগেই রুগির মৃত্যু হয়েছে।এরপরই কুষ্টিয়া মডেল থানায় বিষয়টি জানালে পুলিশ ডাঃআবু সাঈদ সিদ্দিকী কে থানায় নিয়ে আসে,হাসপাতাল মালিক নিজামসহ অন্যরা পলাতক আছে।এ ঘটনায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মামলা হয়েছে মামলা নং-২, তারিখ ২/০৮/২০২০ইং। এবিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম মোস্তফা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। আরো তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়,অপারেশনের সময় কোনো অজ্ঞানের ডাক্তার ছিলো না,হাসপাতাল মালিক নিজাম নিজেই কখনো অজ্ঞান ডাক্তার, কখনো সার্জন হিসেবে অপারেশন থিয়েটারে কাজ করতো।ইসলামিয়া হাসপাতালে দালালদের মাধ্যমে রুগী এনে যেনতেনো ভাবে অপারেশন করা হতো,এখানে নেই কোনো বিশেষজ্ঞ সার্জন নেই কোনো এনেস্থিসিয়াসিষ্ট,নেই কোনো আবাসিক চিকিৎসক।নিয়ম অনুযায়ী একটি ১০শয্যা বিশিষ্ট প্রাইভেট হাসপাতালে ৩জন নিজস্ব ডাক্তার ও ডিপ্লোমাধারী নার্স থাকার কথা সেখানে কিছুই নেই এ হাসপাতালে। এসব অনিয়মের মধ্যেই দির্ঘদিন ধরে চলে আসছে কুষ্টিয়ার ইসলামিয়া হাসপাতাল টি।ভুক্ত ভোগীরা আরো অভিযোগ করে বলেন,ঘটনার পর থেকে নিহত তানিয়ার স্বজনদের উক্ত হাসপাতালের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জন বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করছে যাতে করে তানিয়া হত্যার সঠিক বিচার না হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.