কুমিল্লায় অপহরণকারী চক্র সক্রিয় : মুক্তিপণ দাবী, অনাদায়ে চলে সীমাহীন টর্চার

অপরাধ

হালিম সৈকত :
কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট সুপার মার্কেটের সামনে কফি হাউজ সংলগ্ন ওভার ব্রিজের নিচ থেকে অপহরণের শিকার হয়েছেন জাহিদুল ইসলাম (৩৫) নামে এক চাকুরিজীবী। তিনি কুমিল্লা জেলার বি-পাড়া উপজেলার মহালক্ষীপাড়ার আঃ রশিদের ছেলে।

এই বিষয়ে কুমিল্লা কোতোয়ালী মডেল থানায় ভিকটিম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৪ জনকে আসামী করে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

ভিকটিম ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরায় চাকুরি করেন। পারিবারিক কাজে গ্রামে এসেছিলে। ২৮ তারিখ দুপুর ২.৪৫ মিনিটি ঢাকাগামী বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন ঠিক সেই মূহুর্তে একটি প্রাইভেটকার তার সামনে এসে থামে এবং সে ঢাকায় যাওয়ার জন্য ভাড়া ঠিক করে ওঠে। অল্পদূর যাওয়ার পরই পূর্বে ওঠে থাকা তিনজনের একজন ভিকটিমকে মুখ চেপে ধরে এবং সব কিছু ছিনিয়ে নেয়। তার কাছে থাকা নগদ ৮০ হাজার টাকা, ২ টি স্যামসাং এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন মূল্য ৫৫০০০ / টাকা এবং একটি ব্যাংক এশিয়ার এটিএম কার্ড নিয়ে যায়। এবং কার্ড দিয়ে ১২০০০/ টাকা তুলে নেয়।

জাহিদ বলেন, পরে আমার মোবাইল ফোনে আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করা হয়। বিকাশে টাকা পাঠানোর জন্য আমাকে লোহার রড ও হাতুরি দিয়ে বেদম মারধর করা হয়। আমার স্ত্রীর সাথে কথা বলায় অপহরণকারীরা। তারা আমাকে বলতে বলে যে, আমি এক্সিডেন্ট করেছি টাকা লাগবে এবং বিকাশে পাঠাতে। বিষয়টি আমার ওয়াইফ আঁচ করতে পেরে কোন টাকা পাঠায়নি। তারা থ্রেট করে টাকা না পাঠালে আমাকে খুন করে ফেলবে। অবশেষে তারা ব্যর্থ হয়ে আমাকে মারতে মারতে জাগুরঝুলি মহাসড়কের পাশে ফেলে যায়। পরে কিছুক্ষণ পর বাড়িতে ফোন করি এবং বাড়ির লোকজন এসে আমাকে ময়নামতি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। বর্তমানে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাহিদ ঢাকায় রয়েছেন। জানা যায় একটি সংঘবদ্ধ চক্র প্রতিনিয়ত ক্যান্টনমেন্টের মত একটি নিরাপদ জায়গায় এই অপহরণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি খুবই সেনসেটিভ এবং প্রশাসনের নাগের ডগায়। এই চক্রটিকে ধরার জন্য এখনই প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে মনে করছেন সুধি মহল। সেই সাথে সাধারণ যাত্রীদের সাবধান করেছেন যাতে এই ধরনের নেমপ্লেটবিহীন গাড়িতে ওঠে নিজের জীবন বিপন্ন না করেন। বিষয়টি নিয়ে বেশ বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে। এই বিষয়ে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আনোয়ারুল হক বলেন, এই চক্রটিকে ধরতে আমাদের পুলিশের একটি গ্রুপ তৎপর রয়েছে। আশা করছি খুব শীঘ্রই তাদেরকে ধরতে সক্ষম হব। বিষয়টির প্রতি প্রশাসন নজর রাখছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.